সাউথ আফ্রিকায় এক্সিডেন্টে নিহত ফেনীর আপন দুই ভাইয়ের দাফনকাজ সম্পন্ন



SABD | JOHANNESBURG | RSA


শোকে মহুমান গ্রামে দাদার কবরের পাশে দুই সহোদরের দাফন !


এক মায়ের গর্ভে আলাদাভাবে জন্ম নেয়া দুই সহোদর, বয়সের ব্যবধান ৭ বছর, কিন্তু প্রবাসে বসবাসের সুবাদে থাকা-খাওয়া এক সাথে, চলাফেরাও করতেন দু-ভাই এক সাথে।মৃত্যুও এক সাথে হবে কে জানতো সেটি?

এ হৃদয় বিদারক দৃশ্য দেখে সারা গ্রামের মানুষ শোকে মহুমান। দুইটি খাটিয়া, দুটি কফিন ও সহোদর ভাই ও দুটি লাশ, মা-বাবার চোখের কোণে জ্বল, কখনও কখনও চিৎকার দিয়ে বিলাপ যেনো থামছে না। এ অবস্থা দেখে গ্রাম জুড়ে শোকের মাতম, শুনশান শূন্যতা । 

নীরবে কাঁদছে ছোট-বড় সবাই। সৃষ্টির চিরাচরিত নিয়ম মা-বাবার লাশ কাঁধে নিবে সন্তান , কিন্তু এ পরিবারে চলছে বিপরীত নিয়ম। কাঁধে সন্তানের লাশ ভর করে নিতে নিতে কাঁদছেন হতভাগ্য পিতা কামাল পাশা।




তা দেখে স্বজনরা সবাই হাউমাউ করে কাঁচ্ছেন। ৪০ কদম পার না হতে দুই সহোদরের মা রহিমা আক্তার সুরমা হারিয়েছেন জ্ঞান। একটু পরে জানাযা, কিন্তু বাবার পা-দুটো আর চলছে না। কারো কাছে নেই সান্তনার ভাষা, শুধু চেয়ে থাকা ছাড়া কোনো জবাব নেই স্বজনদের।

দক্ষিণ আফ্রিকায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই সহোদর কামরুল হাসান রায়াহান ও আশরাফুল হাসান রবির লাশ ফেনীর দাগনভুঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের পূর্ব জয়ানারায়নপুর সাহাব উদ্দিনের বাড়ি এসে পৌঁছেলে এমন হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতরণ ঘটে।

নিহত কামরুল হাসান রায়াহান হতভাগ্য পিতা কামাল পাশার বড় ছেলে মেঝ আশরাফুল ইসলাম নয়ন সেজো আশরাফুল হাসান রবি ও ছোট ছেলের নাম অভি হাসান । কোনো মেয়ে না থাকায় ছেলেরাই সব। গত ১৪ বছর আগে জীবিকার তাগিদে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি দেন বড় ছেলে কামরুল হাসান রায়াহান। 




এরপর মেঝ আশরাফুল ইসলাম নয়ন ও সেজো আশরাফুল হাসান রবি । দক্ষিণ আফ্রিকায় তাদের বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন তিন ভাই। বড় ও সেজো জন এক সাথে থেকে ব্যবসা পরিচালনা করতেন। আর মেঝো ভাই ২০০ কিলো মিটার দূরে ব্যবসা করতেন। 

গত ১৯ ডিসেম্বর নতুন প্রাইভেট গাড়ীক্রয় করে মেঝো ভাইয়ের সাথে স্বাক্ষাত শেষে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ফেরার পথে ২০ ডিসেম্বর (বৃহ:বার) বিকেলে দক্ষিণ আফ্রিকার নর্দানক্যাপ প্রভিন্সের ফোপাডা শহরে একটি লরি চাপায় দুই সহোদরসহ তিন বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন।আরেক জনের নাম জামশেদুর রহমান, তাঁর বাড়ি সোনাগাজী।

মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় এ দুর্ঘটনার খবরে নিহতদের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে গত বুধবার দুপুরে স্থানীয় মাদ্রাসার পাশে দুই সহোদরের জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাদা ও দাদুর কবরের পাশে তাদের দাফন করা হয়।

Comments