সাউথ আফ্রিকায় এসেছেন মাত্র এক মাস, তারভিতরে অসুস্থতায় প্রবাসীর হৃদয় বিদারক ও করুন মৃত্যু
SAPB | JOHANNESBURG | RSA
সাউথ আফ্রিকা প্রবাসী বাংলাদেশী
মাত্র একমাসের সাউথ আফ্রিকা প্রবাসীর করুন হৃদয় বিদারক মৃত্যুর ভয়ানক রহস্য
হোসাইন বাবু: আবারো লাশের মিছিলে যোগ হল আলমগীর আহমেদ নামের আরেক জন সাউথ আফ্রিকায় বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশীর লাশ।এইসহ চলতি বছরের এখন পর্যন্ত সাউথ আফ্রিকায় আটাশজন বাংলাদেশী মৃত্যুবরন করেছেন।তার মধ্যে আজকের এই লোকসহ তিনজন বাংলাদেশী শুধু অসুস্থ হয়ে মারা যান।
আর বাকি সবগুলো রেমিটেন্স যোদ্ধা আফ্রিকান কৃষ্ণাঙ্গ সন্ত্রাসী দ্বারা নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে খুন হয়েছেন।ছবিতে নিহত লোকটির বাড়ি ফেনী ছাগলনাইয়া।আমাদের একই এলাকায় বলতে গেলে একেবারেই পাশাপাশি।
আলমগীর আহমেদ ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া থানার মটুয়া গ্রামের বাসিন্দা, মহিলা কলেজের পিছনেই ওনার নিজের বাসা।পরিবারে এক ছেলে ও এক মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে দীর্ঘদিন সেই এলাকায় বসবাস করে আসছেন।
এইখানে (সাউথ আফ্রিকায়) আসার আগে তিনি আরব দেশে ও দীর্ঘদিন প্রবাস জীবনে কর্মরত ছিলেন।পরিবারে তেমন কোন আহামরি অভাব অনটন ছিলনা।নিহত লোকটি সাউথ আফ্রিকায় এসেছে যে, মাত্র এক মাস হয়েছে।
আনুমানিক ওনার বয়স ৬০ বছরের উপরে হবে।এবং কি বয়স অনুযায়ী ওনার শারীরিক কন্ডিশন খুবই খারাপ এবং অসুস্থ ছিল।আমাদের একই হোম টাউনে বসবাস করলেও ওনার সাথে দেশে থাকতে আমার কোন পরিচয় ছিলনা।পরিচয়টা হয়েছে গত কিছুদিন আগে উনি সাউথ আফ্রিকায় আসার পরে।
এইখানে আসার পরে, জোহান্সবার্গে পাশবর্তী মিনি টাউন "রঝেটেনভিল" নামক সিটিতে ওনার সাথে আমার পরিচয় হয়।
পরিচয়টা হয়েছিল,আজম কাকা আমাদের একই উপজেলার বাসিন্দা ওনার দোকানে।
ভাগ্যক্রমে আজম কাকার দোকানে উনি মেহমান হিসেবে আসছিলেন, সেই সুবাধে ওনার সাথে আমার দেখা হয় এবং পরে কথাবার্তার পর পরেই পরিচয়টা হয়েছিল।
পরিচয় দেওয়ার পরে ভালভাবে ওনাকে চিনতে পারলাম, যে উনি আমার কাছের বন্ধু Ahasan Habib এর আপন কাকা।তাই ওনার সাথে একটা ছবি ও তুললাম বন্ধুকে পাঠাবো বলে দেখাবো বলেই।
কথাবার্তার পরে আমি অভাক হলাম ওনার শারিরীক অবস্থা দেখে সত্যিই চোখের পানি চলে আসছিল যে, ওনাকে দেখার পর পরেই।
প্রথমত হল,উনার ডাই-বেটিস ছিল আউট অপ কনট্রোল।দ্বিতীয়ত, হাই ডাইবেটিসের জন্যে ওনার একটি পাঁ কেটে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
আলগা একটি পাঁ লাগিয়ে কোনমতে চলাফেরা করেন।আমি অনেকটাই নির্বাক হয়ে গিয়েছিলাম ওনার এমন অবস্থা দেখে।
কলিজাটার ভেতরেই যেন হাহাকার করে উঠেছিল।পরের দিন ওনার ভাতিজা আমার বন্দুকে ফোন করে আমি কথা বলছি এই যে,,
কেন তোরা ওনাকে এইদেশে পাঠাইলি?
এখন সবার মনে হয়তো প্রশ্নো জাগতেই পারে, এই ধরনের খারাপ এবং মুমূর্ষু অবস্থায় কেন উনি সাউথ আফ্রিকার মত মরনঘাতী দেশে এসেছেন, তাইতো?
বিস্তারিত পুরো কাহিনীঃ -
এটি আসলেই করুন ও হৃদয়বিদারক কাহিনী।একটা মানুষ কখনোই এই অন্তিম সময়ে বিদেশে আসতে পারেনা।যেখানে উনি নিজেই চলতে পারেন না, সেখানে কিভাবে সে বিদেশ গিয়ে কাজ করবেন ? এটি সকলের বিবেকে প্রশ্ন জাগতেই পারে অস্বাভাবিকের কিছুই না।
আসলেই এই অসহায় লোকটি নিরুপায় হয়ে সাউথ আফ্রিকার মত মৃত্যুপুরি দেশে এসেছে শুধুমাত্র তার স্ত্রী এবং বড় মেয়ের অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে।
তার স্ত্রী একজন লোভী এবং হিংসুক মহিলা।স্ত্রীর কারণে বেচারা জীবনে কোন একটা দিন ও মনে হয় শান্তিতে কাটাতে পারেনি।তার স্ত্রীর হিংসা আর লোভের জন্যে বেচারা যৌথ পরিবারের বড়ভাই থেকে ও আলাদা হয়ে যায়।
তারপরেও আগে বিদেশ থাকাকালীন সময়ে যে টাকা পয়সা রোজগার করেছে,সেই টাকাপয়সা খরচ করে আমাদের এলাকায় জমি ক্রয় করে এবং সেই ক্রয়-কৃত জমিতে অনেক টাকাপয়সা খরচ করে বিল্ডিং ঘর তৈরি করেছেন তিনি তারা থাকার জন্য।
বর্তমানে সেইখানেই বসবাস করে আসছে অনেক বছর ধরে।বড় মেয়েটাও সেই মায়ের মত অভিকল হয়েছে।বউয়ের ঝালাতন একদিকে অন্যদিকে মেয়ের খারাপ ব্যবহার সবকিছুই এই অসহায় মানুষটিকে সহ্য করতে হয়েছে।বাড়িতে থাকতেই ওনার একটি পাঁ হাঁটুর নিচ থেকে কেটে ফেলা হয়েছে।উফর্ফ কত নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিলো তারা মা এবং মেয়ে।এটি সত্যি একজন বাবা আর এরেকজন স্বামী'র প্রতি কঠোর অন্যায় ও অবিচার চালানো হয়েছে ঢালাওভা।
এরপরে ও কিভাবে তার দাজ্জাল স্ত্রী এবং দাজ্জাল মেয়ে তাকে বিদেশ যাওয়ার জন্যে চাপ সৃষ্টি করে? How is possibl? We really don't know whats going on with them? টাকা রোজগার করার জন্যে যাতে ওরা সৌখিন জীবনযাপন করতে পারে আরাম আয়েসে থাকতে পারে সেইসব সুবিধা লুটতরাজ করার জন্যে এমন কাজটি করলো।এইটা কারো মাথায় ধরবে কিনা জানিনা।
তিনার প্রতি এই নির্মম অত্যাচারে।পৃথিবীর সব বাবারা বুঝি এমন কষ্ট সহ্য করে সন্তানদের জন্যে?আল্লাহ তুমি এমন সন্তানদের দেশের মাটিতে জন্ম দিওনা।এরা কেমন সন্তান? যে সন্তানেরা নিজের সুখের কথা চিন্তা করে নিজ বাবাদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়?তাও আবার ক্রাইম জগতের বিশ্ব রেকর্ড করা সাউথ আফ্রিকার মতো দেশে? হে মাবুদ আমাদের রক্ষা করো।
আমার খুব জানতে ইচ্ছে করতেছে ,আসলেই কি মেয়েটি ওনার জন্মো দেওয়া নাকি তার স্ত্রী নামদারি লোভী ও নারীজাতির কলঙ্ক তার স্ত্রীর পাপের ফসল?নাহলে কিভাবে পারলো মেয়ে হয়ে বাবাকে মৃত্যুপথের যাত্রী করতে? কিভাবে পারলো জন্মদাতা বাবাকে মেরে পেলতে।?!
এটি আমরা পুরো বাঙ্গালী জাতির প্রশ্ন...
এটি আমাদের পুরো বিশ্ব প্রবাসীদের প্রশ্ন....
এটি আমাদের সর্ব বিবেক এর একটি প্রশ্ন....
অবাক লাগে এমন বর্বররোচিত অত্যাচারকে।দীর্ঘ একমাস অসুস্থ জীবনের সাথে যুদ্ধ করে আজ রাতে এই হতভাগা বাবা নামের বিশাল মনের অধিকারী পরিবারের সুখের জন্যে নিজের জীবন প্রদানকারী এক রেমিটেন্স যোদ্ধার ইহকাল জর্জ হাসপাতাল ওয়েস্টার্ন কেপ সাউথ আফ্রিকার মাটিতে শেষ হল।
(ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নালিল্লাহি রাঝিইউন)
মহান আল্লাহ্ আপনাকে ইহকালের সকল ভুলত্রুটি ক্ষমা করে যেন বেহেশত নসীব করে সেই দোয়া করি।আমিন।
মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং নিহতের পরিবারের প্রতি আল্লাহর দরবারে পরিহাদ করছি, যেনো আল্লাহ তাদের সঠিক জ্ঞান বুঝদান করেন।আমিন!
বন্ধু পারলাম না নিজেকে আর কনট্রোল করে রাখতে, তাই সবকিছু বলে দিলাম।> হোসাইন বাবু।
পরিবার এক আজব মায়া আমাদের দেশে তাই সব কিছু ভুলে তাদের সুখের কথা ভাবতেই এমন হাজারো মানুষ প্রাণ দেয়। আল্লাহ্ ওনাকে ওপারে ভালো রাখুন।
ReplyDelete