এরা আমাদের সূর্য সন্তান (রেমিটেন্স যোদ্ধা)


SAPB | JOHANNESBURG | RSA


সাউথ আফ্রিকা প্রবাসী বাংলাদেশী


এরা আমাদের সূর্য সন্তান (রেমিটেন্স যোদ্ধা)


জোহানেসবার্গ: এটি কমলাপুর রেল স্টেশনের চিত্র নয়-এটি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বহির্গমন গেইটের গত (বৃহ:বার) এর একটি চিত্র, ছবিতে দৃশ্যমান ব্যক্তিগন সদর ঘাটের কুলি নয়- এরা আমাদের সূর্য সন্তান (রেমিটেন্স যোদ্ধা)।এদের যথাযথ সম্মান দিতে শিখুন।


ভাবতে ভালোই লাগে,দেশ এগিয়ে যাচ্ছে অগ্রগতির স্রোতে -সমৃদ্ধির পথে।কিন্তু যখন দেখি এই অগ্রগতির নায়কেরা (প্রবাসী) স্বদেশের বিমানবন্দরে একটা ট্রলি ব্যাবহারের সুবিধা পাচ্ছে না তখন গর্ববোধ করার মানসিকতা হারিয়ে ফেলি আমরা প্রবাসীরা।



আমরা জানিনা ট্রলি স্বল্পতা কিংবা ট্রলি হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে এমনটি করা হচ্ছে কিনা, তবে যতটুকু দেখা গেলো আর উপলব্ধি করলাম তাতে মনে হলো বহির্গমন চত্বরে এক শ্রেণীর দালাল কাজ করে যারা টাকার বিনিময়ে ট্রলি খোলা পার্কিং পর্যন্ত আনতে দেয় এবং তাদের মাধ্যমে টেক্সি ভাড়া করলেও সে সুযোগ পাওয়া যায়।,এখানেও রয়েছে অন্যতম একটি +(দালাল) নামের চক্র যাদের কাজই প্রবাসীদের হয়রানি করা।টাকার বিনিময়ে সকলকিছুই চলে সেখানে।


একটা বিষয় লক্ষ করলে দেখা যায়, যারা শক্ত ভাষায় প্রতিবাদ করতে জানে  তারাও দেখলাম ট্রলি বাহিরে আনতে পারছে,গ্রামের স্বল্প শিক্ষিত আর মধ্যবয়সী যাত্রীরা সে সুযোগ পাচ্ছে না,অবশ্য অনেক শিক্ষিত যুবক ও দেখা যায় জামেলার ভয়ে নৈরাজ্যের কাছে নতজানু  হয়ে মালামাল কাঁধে তুলে নিতে হয়।


আরও একটা বিষয় আমাদের নজরে পড়ে,যারা ট্টলি আনতে বাধা দিচ্ছে তারা কেউই অফিসার পর্যায়ের না, তারা বেশির ভাগই মনে হলো অষ্টম শ্রেণী  নবম শ্রেনীর কর্মচারী অথবা দালাল  প্রকৃতির লোক।




দেশ যখন উপযুক্ত যুবকদের কর্মসংস্থানে হিমশিম খাচ্ছে, তখন হতাশাগ্রস্ত যুবকদের একটা বিরাট অংশ স্বউদ্যোগে, পারিবারিক অর্থায়নে  মা- মাটি  ছেড়ে অনিশ্চিত পথে পাড়ি দেয় বিদেশ,আমরা যাদেরকে বলি প্রবাসী।


এই প্রবাসীদের অপরিচিত পরিবেশে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে প্রাণপণ লড়াই করতে হয়।শান্তনা তাদের একটাই আমার ত্যাগে পরিবার পরিজন ভালো থাকবে,আমার রেমিটেন্সে সমৃদ্ধ হবে নিজ ভূমি মাটি নিজ স্বদেশ।কিন্তু বিনিময়ে তাদের প্রাপ্তি যদি হয় এমন তখন আমাদের উন্নতি আর অগ্রগতি প্রশ্নবিদ্ধ হবে নিশ্চয়ই।



আবার একজন প্রবাসী যখন দেশে  রওনা  হয়  তখন তাকে প্রয়োজনীয় কাগজ  পত্র  যোগাড়, কোম্পানি বা মালিকের সাথে হিসাব নিকাশ, আত্মীয় স্বজনের জন্য কেনাকাটা, মালামাল কাটুন করা সহ আরও অনেক কাজ তাকে করতে হয়।এ বিষয়ে প্রবাসীদের সকলকিছুই জানা আছে।


তার উপর দুরত্ব  বেধে ৬ - ৯,কেউ কেউ   ২০-২২ ঘন্টা জার্নি করে নিজ দেশের মাটিতে  পা রাখে।ততোক্ষণে ঐ প্রবাসী ভাইটি বড়ই ক্লান্ত হওয়ারই কথা,এমতাবস্থায় যখন তার আনিত মালামাল তাকে কাঁধে কিংবা মাথায় তুলে নিতে হয় তখন তার শিশু সন্তানের জন্য আনা শখের খেলনাগুলোও বিরক্তির কারণ হয়ে ধারায়, মায়ের জন্য আনা তসবি আর বাবার জন্য আনা জায়নামাজের বোঝা বইতেও শরীর সায় দেয় না।বউ আর বোনের জন্য আনা কসমেটিক গুলো ইচ্ছে করে ছুড়ে ফেলতে।আর ঐ মূহুর্তে প্রবাসী ভাইটির মনে দেশের প্রতি অনিহা জন্ম নিবে এটাই স্বাভাবিক।


আমাদের ভাবতে অবাক লাগে।যে দেশ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বিশাল প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারে, যে দেশে মেট্রো রেল প্রকল্প বাস্তবায়ন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।সে দেশের প্রধান বিমান বন্দরের  ব্যাবস্থাপনা এতো নাজুক হবে কেন ? সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা কি করে,  চলমান নৈরাজ্য কি তাদের নজরে পড়ে না ?তারা কি শুধু তাদের আখের গুছানো নিয়ে ব্যস্ত ? আমরা প্রবাসীদের এই সকল কিছুর সমস্যার সমাধান কি হবে না??


Comments