দক্ষিণ আফ্রিকায় মাদারীপুরের সিরাজুল ইসলাম নিহত
SAPB | JOHANNESBURG | RSA
জোহানসবার্গ ঃ-
দক্ষিণ আফ্রিকায় মাদারীপুরের সিরাজুল ইসলাম নিহত
দক্ষিণ আফ্রিকায় লাশের পর লাশ।এর কোন কি প্রতিকার নেই?আর কত জিন্দালাশ দেখতে হবে আমাদের কে?
দক্ষিণ আফ্রিকার খাউটেং প্রভিন্স এরিয়ার টেম্বিসা লোকেশনে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিরাজুল ইসলাম মোল্লা নামের এক বাংলাদেশী ব্যবসায়ী গত ২৭ জানুয়ারি ২০১৯ ইং তারিখ রোজ (রবিবার) ইন্তেকাল করেছেন।
(ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন)
নিহত সিরাজুল ইসলাম মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার সন্ন্যাসীর চর গ্রামের হাজী নুর উদ্দিনের ছেলে।
সাউথ আফ্রিকা প্রবাসী বাংলাদেশীর পক্ষ থেকে নিহতের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।আল্লাহ নিহতের পরিবার সদস্যের প্রতি ধারণক্ষমতা দান করুন।নিহত পরিবারের সদস্যদের আর্তনাদ ও রুহের দোয়া কবুল করুন।আমিন।
সিরাজুল ইসলাম মোল্লার জানাজার নামাজ গতকাল ২৯ জানুয়ারী ২০১৯ ইং তারিখ মঙ্গলবার সকাল এগারোটার (১১টা) সময় লেনেসিয়ার সাবেরিয়া চিসতিয়াতে সম্পন্ন হয়েছে এবং লাশ দেশে পেরন করা হয়েছে।
--এ শহর কি জানে?নির্ঘুম মানুষের আর্তনাদ কতটা ভয়ংকর?
--এ শহর কি জানে?মিছে আশায় কাটছে কার কতক্ষন?
তোমরা সন্তানের কষ্ট কিংবা মৃত্যু দেখে মায়ের আর্তনাদ শুনেছো?!তোমরা এক ভাইয়ের মৃত্যু দেখে অন্য আরেক ভাইয়ের আর্তনাদ শুনেছো?তোমরা শিক্ষিত পরিবারের ছেলের জীবন বিপন্ন কিংবা তার নির্মম মৃত্যু দেখে বাবার আর্তনাদ কখনো শুনেছো?তোমরা গৃহহীন ক্ষুধার কষ্টে বাঙ্গালী বন্যার্ত কিংবা আশ্রয় না পাওয়া প্রবাসীদের আর্তনাদ কখনো শুনেছো কিংবা দেখেছো?! তোমরা কি প্রবাসে থাকা স্বজন হারা, নিজ জন্মভূমি থেকে নিগৃহীত প্রবাসীদের আর্তনাদ ঠিকমত দেখেছো কখনো?
প্রতিনিয়ত প্রবাসে থাকা লক্ষ বাঙ্গালীর বোবা কান্না তোমরা বাঙ্গালীরা যদি একবার শুনতে পারতে - তবে কখনও প্রবাস থাকা ১ কোটি ৩০ লক্ষ বাংলাদেশীদের ভিতরে অবহেলীত প্রবাসীদের দেখে নিরবতা পালন করতে পারতে না।নিরবে চোখের অশ্রু ঝরাতে।
বিদেশের মাটি বাঙ্গালীর শরীর থেকে প্রতি মূহুর্তে কত ঘাম শুষে নিচ্ছে এ যেন ঘাম নয়,তপ্ত রক্তের শিখা, তা যদি তোমরা দেখতে আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি তোমরা স্বজনরা শুধু নামাজের বিছানায় বসে থেকে আমরা প্রবাসীদের জন্য সারাক্ষন দোয়া প্রার্থনা করতে।
বাংলাদেশে দৈনিক কয়েক কোটি ডলার রেমিটেন্স এই প্রবাসীর ঘাম জ্বরানো থেকে পেয়ে থাকে যা হিসাবে সরকারী বিভিন্ন কোষাগার থেকে আয়ের এক-তৃতীয়াংশ।প্রবাসী ছাড়া দেশ উন্নতি কল্পনাই করা যায় না।
একমাস যদি প্রবাসীদের পাঠানো টাকা থেকে এই রেমিটেন্স সরকার না পায়? তাহলে একমাস পর থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় সকল দ্রব্য এবং পণ্য উর্দগতি কত মানুষ না খেয়ে মরতে হবে, যার হিসাব সরকার আর এনজিও মিলেও দিতে পারবে না।যেকোন সরকার বেপোরোয়া হয়ে পড়বে।
আর তোমরা সেই প্রবাসী বাঙ্গালীদের রক্ত-ঘামের উপরে কর বসিয়ে দেশের কিছু অংশের মানুষ হাসিঠাট্টা করো? প্রবাসে বসে কর্ম না করলে এখানে যেমন না খেয়ে থাকতে হবে তেমনি পরিবারও না খেয়ে থাকতে হবে।আর বাংলাদেশ অনাহারে দিন কাটাতে হবে।এট সকলেরই মাথায় থাকা উচিৎ।
মনে রাখবা, কলম দিয়ে আইন করা চলে!
কলম দিয়ে সংবিধান করা চলে!
কলম দিয়ে শাসন করা চলে!
এই কলম দিয়ে জাতিকে সম্মানের সর্বউর্দে উঠানো সম্ভব আর তোমরা সেই কলমের কালিকে রক্তে রঞ্জিত করোনা,অসম্মান করোনা।
প্রবাসের কষ্টে অর্জিত টাকায় যদি আমার স্বজাতি বাঙ্গালীর সামান্য মুনাফা নির্ধারণে যদি এতটুকু সুখ-সমৃদ্ধি লাভবান হয়।তাহলে তোমরা বাঙালিরাই কামিয়াব হবে।এখানেই আমাদের সার্থকতা।প্রবাসীদের দুক্ষের কথা বুঝতে শিখো,প্রবাসীদের দুক্ষের কথা লিখতে শিখো,প্রবাসীদের মূল্যায়ন করা শিখো।এটাই আমরা প্রবাসীদের চাওয়া-পাওয়া।তোমরা দেশে যারা আছো তাদের কাছে আমরা প্রবাসীদের এর বাহিরে আর কনো চাওয়া-পাওয়া নেই।
আমরা দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থিত সকল প্রবাসী ভাইদের জন্য সময় পেলে নামাজ পড়ে দোয়া কইরো।পেটের দায়ে পরিবারের সুখ শান্তির কথা চিন্তা করে, আমরা অভিভাবকহীন একটি রাষ্ট্র যার নাম দক্ষিণ আফ্রিকা,সে দেশে বসবাস করছি।প্রতিনিয়ত বুলেট এর প্রত্যয়িত হয়ে সারাক্ষন দুরচিন্তা নিয়ে কর্মস্থলে থেকে টাকা আয় করে পরিবারের জন্য পাঠাচ্ছি।আমাদের ভিতরে অধিক প্রবাসীরাই দেশে যেমন এতিম ঠিক প্রবাসেও আমরা এতিম।আল্লাহর উপরে বিশ্বাস রেখেই আমাদের পথচলা।তিনিই সকল কিছুর মালিক ও রক্ষাকারী।
ভালো থেকো প্রিয় বাংলাদেশ ও প্রিয় দেশের মানুষ!
দুঃখ জনক। আল্লাহ যেন, আমার এই প্রবাসী ভাইকে বেহেশতীদের সাথী হিসেবে কবুল করে। ধন্যবাদ সাংবাদিক ভাইকে।তার সুন্দর লেখনীর জন্য।
ReplyDelete